Thursday, September 4, 2014

কেউ তো কথা রাখেনি ....

একদা একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্প ছিল। তার নাম ছিল পরমাণু বিদ্যুৎ। যখন সে ছোট ছিল, তখন সে জ্বলজ্বল করত উজ্বলতায়। সে তখন খালি ইউরেনিয়াম পোড়াতো আর বিদ্যুৎ উৎপন্ন করত। এখন তার বয়স হয়েছে। সে এখন টাকা পোড়ায়, ইউরেনিয়াম নয়। 

কেউতো কথা রাখেনি। কথা ছিল বিদ্যুৎ আসবে সস্তায় গরীবের বাড়িতে। এখন পেলাম খরচ এত বেশি যে আর হিসাব করতে পারছি না।

ফুকুশিমার চুল্লির আগুন ঠান্ডা করতে জাপানি সরকারকে খরচা করতে হচ্ছে ২০৪০ কোটি টাকা। বানাতে হবে বরফের দেয়াল। শেষ চেষ্টা যাতে বিষাক্ত দুষিত জল সাগরের জলে আর মিশে না যায়, অন্তত কম যায়।

রাবনের চিতা কি এত কম টাকায় নেভে? টেপকোকে বাঁচাতে জাপানের বেরিয়ে গেছে ৬৬,৩০,০০,০০ টাকা। শেষ পর্যন্ত লাগবে এরও প্রায় দ্বিগুন টাকা আর অপেক্ষা করতে হবে ৪০ বছর।

তবুও বিজ্ঞানীরা বলে চলেছেন পরমাণু বিদ্যুৎ করবে মুশকিল আসান। করবে বিশ্ব উষ্ণায়নের সমাধান দেবে সস্তায় বিদ্যুৎ! ইংরেজ সরকার বাজেটের সব টাকা খরচ করে ফেলল শুধু পরমাণু ঘটিত গোলমালকে ঠিক করার অক্ষম চেষ্টায়, মানে থাকলনা অন্তিম সময়সীমা মানে deadline এর। সরকার আজও খুঁজে চলেছে সেই বুদ্ধিমান ব্যাবসায়ীকে যে বানাবে পরের পরমাণু চুল্লিটা।

কেউ তো নেই কোথাও নেই। আছে কেউ কেউ আছে যারা ব্যবসা যুগিয়ে চলেছে ফ্রান্স (যেমন কুদানকুলাম), রাশিয়ান (যেমন রূপপুর, বাংলাদেশ) আর চাইনিজ কোম্পানিগুলিকে। 

একটা জীবন্ত পরমাণু বোমাকে আটকে রাখতে গেলে টাকার পরোয়া করা চলে না। 

নিশ্চিত করতে হবে নিরাপত্তা। নতুন গবেষনা নতুন বিপদ সামনে আসছে, বাড়ছে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার খরচের বহর। আধখানা শতাব্দী লেগে যাবে উদ্ধার পেতে আর নিরাপত্তার খরচ ... সে কথা আর কি বলার আছে।

পরমাণু বিদ্যুতের সমর্থকদের কাছে এর উত্তর একটাই যেটা তারা দিয়ে আসছেন প্রতিনিয়ত - পরের বার আর এমনটা হবে না। কিন্তু ফুকুশিমা? সে তো আবার প্রমান করল এমনটাই হয়ে এসেছে, এমনটাই হবে। কেউতো কথা রাখেনি, অভিযোগ জানবো কাকে?

ফুকুশিমার বিষাক্ত জল ২২০০ millisieverts দূষন ছড়াচ্ছে প্রতি ঘন্টায়। বর্ম দিয়ে ঢাকা না থাকলে এই জল মানুষকে মেরে ফেলবে এক ঘন্টাতে। বিপর্যয়ের পরও, কথা ছিল এর চেয়ে ২২ গুন কম দূষনের। কেউ তো কথা রাখেনি...

কিন্তু এবার মনে হয় গল্পটা অন্যরকম হতে চলেছে। জাপানের ৫০টি চুল্লির মধ্যে চালু আছে এখন মাত্র ২টি। এরাও বন্ধ হতে চলেছে ১৫ই সেপ্টেম্বর, মেরামতির জন্য। ৫০ বছরের মধ্যে এই প্রথম জাপানে একটিও পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকবে না। ইংরেজ সরকারকের পরমাণু পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের স্বপ্নকেও মনে হচ্ছে হার মানতে হবে কঠিন বাস্তবের কাছে। 

পরমাণু বিদ্যুতের মিথ্যা স্বপ্নের ভোর ফিকে হয়ে আসছে কিন্তু অপেক্ষা করছে এক নতুন ভোর ২১ শতকের ভোর - পরিবেশ প্রকৃতির সাথে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাবে প্রযুক্তি, হাঁটবে না সে পিছন দিকে, ২০শতকের দুঃস্বপ্নের দিকে।

- Damian Carrington is the head of environment at the Guardian
অক্ষম অসম্পূর্ণ বাজে অনুবাদটা আমার
September 7, 2013 

No comments:

Post a Comment